এক রোহিঙ্গা মেয়ের জীবনী চোখে পানি আশার মত

এক রোহিঙ্গা মেয়ের জীবনী চোখে পানি আশার মত

মায়ানমার থেকে আশা বাংলাদেশে স্থান নেওয়া লাখো রোহিঙ্গাদের বসাস্থান কক্সবাজার আর সেই কক্সবাজারেই মিললো এক নাম করা হোটেলে কাজ খুজতে এসা এক রোহিঙ্গা মেয়ের দুঃখ, কষ্টে ভরপুর অসাধারণ প্রতিভা।

এক রোহিঙ্গা মেয়ের জীবনী

কক্সবাজার ডায়মন্ড হোটেলের মালিক কাসেম ভাই এর থেকে বর্ণিত সেই প্রতিভাবান রোহিঙ্গা বোনের কাহীনি: একদিন হোটেল অফিসে বসে আছি হঠাৎ আনুমানিক ২০ বছরের মেয়ে আমাকে সালাম দিয়ে সামনে দাড়ালো। এবং আমার কাছে একটা কাজ চাইলো। তার কোলে এক দেড় বছরের একটি বাচ্চা ছিল। মেয়েটা রোহিঙ্গা ছিল। তাই মেয়েটার থেকে তার রোহিঙ্গা শিবিরের অর্থাৎ সে রোহিঙ্গা বাসস্থানের যেখানে থাকে সেখানকার প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য নিয়ে আমার হোটেলের পরিচ্ছন্ন কর্মি কাজে নিয়োগ দিলাম।

মেয়েটি যেহেতু রোহিঙ্গা ছিলো তাই সন্দেহ থাকা স্বভাবিক । সে জন্য তার কাজের প্রথম দিন থেকেই অফিস রুমে বসে সি সি ক্যামেরায় ওর গতিবিধি পর্যবেক্ষন করতে লাগলাম। মেয়েটি ভালো ভাবেই তার কাজ গুলো করছিল সন্দেহ করার মতো কিছুই চোখে পরলো না। কিন্তু হঠাৎ একদিন ৫ম তালায় লক্ষ করলাম মেয়েটি একটি রুমের ভিতর ঢুকলো প্রায় ৪০ মিনিট হলো কিন্ত বের হচ্ছেনা। আমার মধ্যে একটা খারাপ সন্দেহ তৈরি হলো। কর্মচারী মারফত খবর নিলাম রুমটি ভাড়াও হয়নি, আমার একটু অন্য রকম সন্দেহ হলো। তাই নিজেই ৫ম তালায় গিয়ে দরজা একটু ফাঁক করে দেখি বাচ্চাটা এক পাশে ঘুমাচ্ছে আর মেয়েটা জায়নামাজে দাড়িয়ে নামাজ পড়ছে আর অঝোর ধাড়ায় কাদছে দৃশ্যটা দেখে নিজেকে অপরাধি মনে হলো খারাপ চিন্তা করার কারনে।

এক রোহিঙ্গা মেয়ের জীবনীপরে মেয়েটাকে অফিসে ডাকলাম আর ব্যাক্তি গত বিষয়ে খোজ নিয়ে জানতে পারলাম যে সে পবিত্র কুরআনের হাফেজা, তার স্বামি কে বার্মার হায়েনারা শহিদ করে দিয়েছে। পরে মেয়েটার কন্ঠে কুরআন তিলাওয়াত শুনতে চাইলাম সে, সুরা মায়েদা থেকে তিলাওয়াত করে শুনালো। কি চমৎকার তিলাওয়াত, এর পরে রহিঙ্গা শিবিরে অবস্থানরত তার মা, বাবাকে এনে আমার হোটেলের পাশে একটা কাজে লাগিয়ে দিলাম। ঘটনাটার কিছু দিন পরে,কাসেম ভাই মেয়েটিকে বিবাহের ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন। তিনি যখন মেয়েটার ঘটনা বর্ননা করছিলেন তখন নিজের অজান্তেই চোখ থেকে পানি ঝরছিল।

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *