টেইলরের ব্যাটিংয়ে ভরাডুবিতে বাংলাদেশ।
টেইলরের ব্যাটিংয়ে ভরাডুবিতে বাংলাদেশ।
সুযোগ পেলে কে বা তা কাজে লাগাতে না চায়। আর সুযোগ যদি নিজে থেকেই চলে আসে তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। তাও যদি হয় আবার ক্রিকেট মাঠে, দীর্ঘদিন ধরে আমরা দেখেছি, কোন খেলোয়ারের যদি মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং ভাবে হলেও ইজ আউট নট আউট হয়ে যায়। অর্থাৎ কোন খেলোয়াড় যদি লাইভ পেয়ে যায় সেটা ভূল বসোতই হোক অথবা, মিস ফিল্ডিংয়ের কারণেই হোক না কেন, তাহলে সে ম্যাচটিতে ওই খেলোয়াড় কে আর থামানো যায় না।
ঠিক তেমনি হয়েছে আজকে টেইলরের সঙ্গে। দিনের শুরুতে যখন মাঠে টেইলর হয়তোবা, আজকের দিনটা তার জন্য ১ রানে গুটিয়ে যেত। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস বাংলাদেশের জন্য, পরপর দুইটি ক্যাচ তাও আবার টেইলরের ক্যাচ মিস হওয়ার কারণে তিনি সহজেই তুলে নিলেন ১৫৬ বলে ১৪৯ রান।
দিনের শুরুতে খেলতে নামা রস টেইলর ব্যাট শুরু করেছেন জড়তা জরতা নিয়ে । এই জরতা কাটিয়ে ওঠার অগেই তাকে ফিরিয়ে ভালো ইউকেট দিয়ে শুরু করতে পারতো আজ বাংলাদেশ। কারণ, শুরুতেই ব্যাট করতে আসা টেইলর আবু জায়েদের তিন বলে দুবার ক্যাচ তুলে দিয়েছেন। কিন্তু একটিও ক্যাচও নিতে পারেনি বাংলাদেশ ।
দুটি ক্যাচ মিছ হাওয়ার পরে, টেইলর মারকাটারি ব্যাটিংয়ে ক্যারিয়ারের যোগাযোগ নিজের করেছেন ১৮তম টেস্ট সেঞ্চুরি। টেইলর ও উইলিয়ামসনের রেকর্ড গড়া জুটিতে রান এসেছে ওয়ানডের গতিতে। ওয়েলিংটন টেস্টের চতুর্থ দিন লাঞ্চের সময় নিউজিল্যান্ডের রান ৩ উইকেটে ১৯৮ ছিলো ।
১০৫ বলে ৭৪ করে আউট হয়েছেন উইলিয়ামসন। টেইলর খেলছেন ১৫৬ বলে ১৪৯ রানে। সোমবার সকালের এই সেশনে ৩২.৪ ওভারে কিউইরা তুলেছে ১৬০ রান!
বৃষ্টিতে প্রথম দুই দিন ভেসে যাওয়ার পর তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ ১ম ইনিংসে গুটিয়ে গিয়েছিল ২১১ রানে।
আগের দিন বিকেলে দুর্দান্ত বোলিংয়ে নিউ জিল্যান্ডের দুই ওপেনারকে ফিরিয়েছিলেন আবু জায়েদ। এ দিনের শুরুটাও হতে পারত দারুণ। ১৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা টেইলর আর ১ রান যোগ করেই সুযোগ দিলেন দুইবার। কাভারে আপাত সহজ ক্যাচটি নিতে পারলেন না মাহমুদউল্লাহ। এক বল পর দ্বিতীয় স্লিপ থেকে বাঁয়ে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নিতে পারলেন না সাদমান ইসলাম।
তিন বলের মধ্যে দুবার জীবন পেয়ে টেইলর আবু জায়েদের পরের ওভারেই তিন বলের মধ্যে মারলেন দুটি বাউন্ডারি। সেই যে ছুটতে শুরু করলেন, তাকে আর থামানো যায়নি।
পেছন থেকে এগিয়ে অবশ্য আগে ফিফটি করেছিলেন উইলিয়ামসন, ৬৭ বলে। খানিক পর টেইলর ফিফটি পেয়ে যান ৬১ বলে।
ফিফটির পরপর আরেকটি সুযোগমতো দিয়েছিলেন টেইলর। বোলার সেই আবু জায়েদ। তার কাট শটে বল উড়ে গেছে কিপার ও প্রথম স্লিপের মাঝ দিয়ে। লাফিয়েও হাত ছোঁয়াতে পারেননি কিপার লিটন। সেখান থেকে টেইলর ছুটেছেন ঝড়ের গতিতে। ফিফটি থেকে সেঞ্চুরিতে যেতে লেগেছে কেবল ৩৬ বল!
টেইলের সেঞ্চুরির আগেই অবশ্য আউট হয়েছেন উইলিয়ামসন। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারার পরের বলে দিয়েছেন ফিরতি ক্যাচ। সেশনে বাংলাদেশের একমাত্র প্রাপ্তি। কিন্তু তার আগে দুজন মিলে গুঁড়িয়েছেন বাংলাদেশের বোলিং।
ক্যাচের সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি কয়েকবার অস্বস্তিতে পড়েছেন দুজন। বল ব্যাটের কানা নিয়েছে কয়েকবার। তাতে দমে যাননি দুজন, রান বাড়িয়েছেন দ্রুত। দুজনের ১৭২ রানের জুটি এসেছে ১৮৬ বলে।
দুজনের একসঙ্গে এটি অষ্টম শতরানের জুটি, নিউ জিল্যান্ডের সর্বোচ্চ। পেছনে পড়েছে টম ল্যাথামের সঙ্গে উইলিয়ামসের সাত সেঞ্চুরি জুটি। নিউ জিল্যান্ডের প্রথম জুটি হিসেবে দুজনের জুটির রান ছুঁয়েছে তিন হাজার।
উইলিয়ামসনের বিদায়ের পরপর তাইজুলকে গ্যালারিতে আছড়ে ফেলে টেইলর সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন ৯৭ বলে। তার ইনিংসই যেন বাংলাদেশের হতাশাবিজ্ঞাপনের অভাস দিচ্ছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (চতুর্থ দিন লাঞ্চ পর্যন্ত)
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২১১
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৪৫ ওভারে ৩২৬/৩ (আগের দিন ৩৮/২) (উইলিয়ামসন ৭৪, টেইলর ১৪৯*, নিকোলস ৮১*।
খবরটি লেখার সময় খেলার আপডেট এমনই ছিলো। খেলা শেষে নতুন আপডেট যুক্ত করা হবে।