স্মার্টফোন ও ট্যাবের ডাটাবেজ তৈরি শুরু হচ্ছেঃ মোস্তাফা জব্বার।
স্মার্টফোন ও ট্যাবের ডাটাবেজ তৈরি শুরু হচ্ছে এ মাসেঃ মোস্তাফা জব্বার।
স্মার্টফোন ও ট্যাব মেলার উদ্বোধন করার সময় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন। আমাদের সামনে তিনটি চ্যালেঞ্জ।
১। সরকারকে পুরোপুরি ডিজিটাল তথা কাগজবিহীন সরকার করা।
২। দেশের সব পোস্ট অফিসকে ডিজিটাল করা।
৩। এবং শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর।
এই তিনটিরই কাজ শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরই অগ্রগতি জানতে পাবেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হওয়া স্মার্টফোন ও ট্যাব মেলার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। মেলা চলবে শনিবার (১২ জানুয়ারি) পর্যন্ত। মেলার আয়োজক এক্সপো মেকার।
তিনি বলেন, জানুয়ারি মাসের মধ্যে আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ফোন আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) ডাটাবেজ তৈরি শুরু হবে। এটা তৈরি সম্পন্ন হলে দেশে আর চোরাই পথে মোবাইল আসতে পারবে না। এলেও তা শনাক্ত করা যাবে।
দেশে মোবাইল ফোনের আমদানি কমেনি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন দেশে বৈধ পথে আমদানির চেয়ে চোরাই পথে মোবাইল আসার হার দ্বিগুণ হয়েছে। ডাটাবেজ তৈরি করা গেলে এমনিতেই চোরাই পথে মোবাইল আসা বন্ধ হবে। এছাড়া, দেশেও এখন মোবাইল ফোন উৎপাদন হচ্ছে। ফলে এভাবেও চাহিদা মিটছে।’
তিনি জানান, দেশ মোবাইল আমদানিকারক থেকে উৎপাদকের দেশ হয়ে গেছে। এখন রফতানিকারক দেশও বলা যেতে পারে। কারণ, বিদেশে মোবাইল রফতানিও হচ্ছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার তার বক্তব্যে এ কথা বলেছেন।
মোস্তাফা জব্বার আরো বলেন, দেশে এখন ছয়টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ফোন তৈরি করছে। শিগগিরই আরও দুটি প্রতিষ্ঠান মোবাইল উৎপাদন শুরু করবে।’ শুধু মোবাইল নয় শিগগিরই দেশে মোবাইলের মাদারবোর্ডের উৎপাদন শুরু হবে বলে তিনি জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বর্তমানে দেশে সাড়ে তিন কোটির মতো মোবাইল ফোন আমদানি হচ্ছে। এরমধ্যে ৭৭ ভাগই স্মার্টফোন।
অথচ ২০১১-১২ সালে দেশে আমদানি হতো এক কোটির মতো মোবাইল ফোন, যার মধ্যে মাত্র এক ভাগ ছিল স্মার্টফোন। ফলে অগ্রগতিটা সহজেই চোখে পড়ে।
দেশে বর্তমানে ৯ কোটির বেশি মোবাইল গ্রাহক আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মোবাইল এবং স্মার্টফোন দেশের মানুষের ‘লাইফ স্টাইল’ কে বদলে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকার দেশে এক কোটি ২৮ লাখ কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে দেশের বেকারত্ব দূর করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
এরমধ্যে বেশির ভাগই যেন তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে হয়। সেজন্য তরুণদের দক্ষ করতে আমরা প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এরইমধ্যে বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মেলার পৃষ্ঠপোষক (সিলভার স্পন্সর) মটোরোলার পরিবেশক স্মার্ট টেকনোলজিসের (টেলিকম বিজনেস) পরিচালক সাকিব আরাফাত বলেন। আগামী ২ মাসের মধ্যে আমরা মটোরোলার আরও ৪টি স্মার্টফোন বাজারে অবমুক্ত করবো। এরই মধ্যে আমরা দেশের ১৫টি জেলা শহরে আমাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছি। যা আগামী ৩ মাসের মধ্যে ৪০টিতে উন্নীত হবে।
গত ৩ মাসে আমরা ৬ হাজার মটোরোলা সেট বিক্রি করেছি বলেন তিনি উল্লেখ করেণ। তিনি আরো বলেন, এরমধ্যে মাত্র ১০-১২টি সেট আমাদের কাস্টমার কেয়ারে এসেছে।’ মটোরোলার প্রতিটি সেট ১৫ মাসের ওয়ারেন্টি দেয় বলেও তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৭ সালে দেশে স্মার্টফোন প্রবেশ করে ৮১ লাখ। ২০১৮ সালে যার পরিমাণ কমে হয়েছে ৭৬ লাখ। কমে যাওয়ার কারণ চোরাই পথে মোবাইলের আগমন বলে জানান অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা। তারা আরো বলেন, গত বছর ৩ কোটি ৩০ লাখের মতো মোবাইল ফোন দেশে বিক্রি হয়েছে, যার মধ্যে ৭ ভাগ ফোনই ছিল দেশে তৈরি।
স্মার্টফোন ও ট্যাব মেলায় হুয়াওই, স্যামসাং, সিম্ফনি, টেকনো, ভিভো, উই, গোল্ডেনফিল্ড, মটোরোলা, নকিয়া, আইফোন, ইউসিসি, আইটেল, ইনফিনিক্স, ইউমিডিজি, ডিটেল, এডিএ, ম্যাক্সিমাস ব্র্যান্ডের মোবাইল পাওয়া যাবে।

এছাড়া, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান স্মার্ট ডিভাইস প্রদর্শন ও বিক্রি করছে। মেলায় কিছু নতুন মডেলের স্মার্টফোন উন্মোচনও করা হবে বলে জানা গেছে। মেলা উপলক্ষে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ ছাড় ও উপহার দিচ্ছে।
মেলায় বিভিন্ন পণ্যে মূল্য ছাড়ের পাশাপাশি উপহার, গিফট বক্স, র্যাফেল ড্র এবং বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা রয়েছে। মেলা চলবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। মেলায় প্রবেশ টিকিটের দাম ২০ টাকা। তবে শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড দেখিয়ে বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।